এম,আমিনূর রহমান সন্ধা থেকে অঝোরে বৃষ্টি পড়ছে থামবার নাম নেই,চৈত্র মাসে এমন বে-রসিক বৃষ্টি মেজাজটাই তিরিক্ষী করে দিল।আমার কাজটা খুবই জরুরী।দায়িত্বহীন হওয়া যাবে না তাহলে পুরো অনুষ্ঠানটাই তবে পন্ড হয়ে যাবে। নাহ্ উঠে পড়ি আমাকে শুয়ে থাকলে চলবেনা।১৯৭৮ সালের কথা বলছি। আমাদের স্কুলে প্রতি বছর মার্চ মাসের ২৬ তারিখ স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান হয়,সারা দিন ধরে বিভিন্ন ক্রিড়াপ্রতিযোগীতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলে। ফান্ড দেয় স্কুল কতৃপক্ষ আর ব্যাবস্থাপনা করে দশম শ্রেনীর ছাত্ররা যারা অচিরেইস্কুল থেকে বিদায় নেবে।যখন নিচু ক্লাসে পড়তাম তখন মনে মনে ভাবতাম কবে এমন বড় একটা দায়িত্ব পাবো আর আজ যখন পেলাম তখন মেজাজটা সপ্তমে।আমরা ১৯৭৯ সলের SSC পরীক্ষার্থী।অনুষ্ঠানের জন্য সদর থেকে মাইক ভাড়া করে স্কুলে পৌছে দেয়াপর্যন্ত আমার কাজ।বন্ধুরা বললো তোকে সবচেয়ে সহজ দায়িত্ব দিলাম।কত সহজ তা এখন হাড়েহাড়ে টের পাচ্ছি। তথাস্তু,আমি একদিন আগে বাড়ী থেকে লন্চযোগে সদরে এসে হাজির।সদর বলতে খুলনা শহর।সেখানে আমাদের একটা বাড়ী আছে,আমার দাদা যখন রেজিসট্রী অফিসে দলিল লেখক ছিলেন তখন জমি কিনে তিন কামরা বিশিষ্ঠ এই দালান ঘরটি নির্মান করিয়েছিলেন।আমার বড় চাচা স্হায়ী ভাবে এবাড়ীতে বসবাস করেন।তিনি সরকারী চাকুরে,ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের পেসকার।সরকারী চাকরী করেও কি এক অদৃশ্য ক্ষমতার বলে ২৮ বছরের চাকরী জীবনে একবারও বদলী হন নাই।এই রহস্যজানার আগ্রহ পেশ করেছিলাম একবার বড় চাচার কাছে ,বলেছিলেন আগে সরকারী চাকরী পাও তারপর শেখাবো।সরকারী চাকরীও পাওয়া হয়নি কৌশলটি শেখাও হয়নি।যাহোক মূল কাহিনীতে আসি একটা রিক্সা নিয়ে বাগানবাড়ী রহমান ভাইর মাইকের দোকানে পৌছালাম।রিক্সাওয়ালা মেজাজটাআরেক ডিগ্রীচড়ালো। বারোআনার ভাড়া বলে কিনা এক টাকা দিতে হবে কেমন লাগে বলুন?বৃষ্টি হলে ভাড়া বেশী,রদ্দুর বাড়লে ভাড়া বেশী,গরম পড়লে ভাড়া বেশী,আমাদের কি টাকার গাছ আছে?তর্কে গেলামনা শুধু চোখ গরম করে তাকালাম ওর দিকে তাতেই বেচারা মিইয়ে গেল।বড়ই করুনা হলো,দিলাম এক টাকা যাহ!, বুঝলাম দিনটা আজ ভালো যাবেনা।কিন্তু এতো খারাপ যে যাবে তা আগে বুঝিনি।শেষ পর্যন্ত ভূতের খপ্পরে পড়বো ভাবলে আজও গায়ের লোম খাড়া দিয়ে ওঠে। শিঁরদাড়া বেয়ে ঠান্ডা বরফ স্রোত নামতে থাকে।আরো কয়েকবার ভূতের পাল্লায় পড়েছি কিন্তু এতো ভয়াবহ না।একবার তো ভূতের জনসভার মধ্যে গিয়ে পড়লাম,সেকি ভয়ানক বিপদ।যাক সে কাহিনী অন্য আর একদিন বলবো।রহমান ভাইর কাছে আগেই মাইক বুকিং দেয়া ছিল স্বাধীনতা দিবসে মাইকের একটু ক্রাইসেস থাকে,ঘন্টাখানেক বসার পর বিয়ে বাড়ী সেরে একটি মাইক ফেরৎ এলো সেইটাই নিয়ে রিক্সা করে লন্চঘাটে যখন পৌছালাম তখন রাত ৯টা।সাড়ে নয়টায় লন্চ ছাড়বে কিছুটা উজান যেতে হবে তবে রাত একটা দেড়টার মধ্যেই ঘাটে পৌছানো যাবে।লন্চে উঠে পড়লাম।খুলনা থেকে গাওঘরা ঘাট স্বাভাবিক ভাবে লন্চে তিন ঘন্টা সময় লাগে।এখনকার দিনে নৌপথে কেউ যায়না,স্থলপথে এখন ৩০/৪০ মিনিট সময় লাগে।রাস্তা পাকা করা হয়েছে,ব্রীজ-কালভার্ট হয়েছে তখন এসব ছিল না নৌপথ ছাড়া উপায়ও ছিলনা। ঠিক সাড়ে নয়টায় লন্চ ছাড়লো ততোক্ষনে বৃষ্টিটা ধরে এসেছে পুব আকাশে চৈত্রের এক ফাঁলি চাঁদ।আকাশটা পুরোপুরি পরিস্কার না কিছু সাদা মেঘ রয়েছে তবে চাঁদ ওঠাতে ভালই হলো বাড়ী চলে যাবো।গাওঘরা লন্চঘাট থেকে দু'কদম হাটলেই আমার মামা বাড়ী দুই মামীই আমাকে ভীষন যত্ন করেন।পাশেই আমার বড় খালার বাড়ী,বড় খালা আমার মায়ের চেয়ে কোন অংশেই কম যত্ব করেন না।কিন্ত কোথাও থাকতে মন চাইছে না।বাড়ী চলে যাবো।গাওঘরা লন্চঘাটে মাছের ডিপোতে মাইক আর ব্যাটারী নামিয়ে দিলেই আমার দায়িত্ব শেষ বাকিটা বন্ধুরা করবে,আমি শুধু সকালবেলা গোছল করে ক্রিচ দেয়া প্যান্ট-সার্ট পরে মাথায় একখাবলা তেল মেরে চুলের বামপাশে ত্যাড়া কেটে বাবুর মত হেলেদুলে মাঠে হাজির হবো ব্যাস্। এবার শুধু একজন সাথী দরকার কারন দুই কিলো পদব্রজেই পাড়ি দিতে হবে তাও আবার মধ্যরাত্রে,একা যওয়া মুসকিল বটে।একবার লন্চের ডেক থেকে নিচে গিয়ে দেখার চেষ্টা করলাম আমার গ্রামের কেউ আছে কিনা।হারিকেনের আবছা আলোয় কাউকে চেনা গেলনা তবুও ভরসা হারালাম না।কাউকে না কাউকে পাওয়া যাবে।খোলা কাঠের বেন্চিতে চাদর মুড়িদিয়ে আলুর বস্তা হয়ে পড়ে আছে কিছু লোক।এদের মধ্যে হয়তো আমার সাথী আছে কেউ না কেউ।রাত বাড়ার সাথে সাথে নদীর খোলা হাওয়ায় বেশ ঠান্ডা লাগছে।মা বলেছিল বাবা চাদরটা নিয়ে যা নিলাম না,এই গরমের মধ্যে চাদর নিয়ে ঘুরা যায় নাকি?মার যতো সেকেলে বুদ্ধি,মনে মনে বললাম।মুখে বললাম থাক মা চাদর লাগবে না।চাদরটা মা'র হাতে ছিলো যেন আরো কিছু বলতে চাইলো,ওটা নিতে পিড়াপিড়ি করবে ভেবে ঘুরে দাড়িয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলাম। এখন মনে হচ্ছে চাদরটা আনলেই ভালো হতো,মা কি করে যেন আমার কি লাগবে তা আগে থেকেই বুঝে যায়।লন্চের চিমনির কাছে একটু ঘেষে দাড়াই এখানে বেশ ওম লাগছে।চাঁদের আলোয় ঘড়ি দেখার চেষ্টা করলাম ঘড়ি মহাষয় বড়ই সৌখিন ১০টা ১০মিনিটেই ঘুমিয়ে পড়েছে।এটাকে নিয়ে আর পারা যায় না।এখন কি কাউকে জিগ্যেস করা যায় যে কটা বাজে? বাবুর নিজের হাতে ঘড়ি রয়েছে আবার অন্যকে সময় জিগায়,মান-ইজ্জতের ব্যাপার, সবাই বলবে ওটা ঘড়ি নাকি ঘোড়া? যত্তসব যা বাজে বাজুক একজন সঙ্গী পেলে আর ভয় নেই। লন্চ ঘাটে ভিড়েছে।মাছের ডিপোর লোক দিয়ে মাইক নামানো হলো, মনটা হালকা হলো কিন্তুসাথে সাথে খেয়াল করলাম কোন যাত্রী নামার নেই অর্থাৎ আমার বাড়ী যাবার কোন সাথী নেই।দ্রুত চিন্তা করতে লাগলাম এখানে নামবো কি নামবোনা দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে লন্চ ছাড়ার আগে।এর পরে ঘাট আছে সুরখালী বাজার প্রায় এক ঘন্টার পথ,আমার বাড়ী থেকে দুই কিলো দক্ষিনে।গাওঘরা নামলে দুই কিলোমিটার দক্ষিনে হাটতে হতো আর সুরখালী নামলে দুই কিলোমিটার উত্তরে হাটা লাগবে।তবে সুখের বিষয় সুরখালী বাজারে আমার এক বন্ধুর মুদি দোকান আাছে,সেও আমাদের সাথে SSC পরীক্ষার্থী বিশ্বনাথ অধিকারী আমাদের সবার প্রিয় বন্ধু "বিশ্ব"।সারাদিন মুদি দোকান চালায় রাত্রে ঝাপ টেনে পড়াশুনা করে এবং দোকানে ঘুমায়।বাড়ী যাবার কোন সঙ্গীসাথী না পেলে ওর সাথে থাকা যাবে।অতএব সুরখালী বাজারে নামবো মনস্থির করলাম।কিন্তু সেখানেও কোন সাথী জুটল না,পোড়া কপাল। বিশ্ব'র দোকানের ঝাপে যখন থাবা দিচ্ছি তখন মধ্যরাত অতিক্রান্ত।কোন সাড়া সব্দ নেই,কেমন ঘুমরে বাবা?জোরে জোরে আরো দু'একবার থাবা দিতেই কেউ কর্কশ গলায় হাক দিলো ক্যাডায় দোহানের দরজা ভাঙ্গে?ওরে বাবা এতো দেখি আরেক বিপদ।শেষকালে কি চুরি,ডাকাতির মামলায় পড়ি? আমার মুখে একটা টর্চের আলো এসে পড়লো লোকটি স্যান্ডেলের চটাস চটাস সব্দ তুলে আমার সামনে এসে দাড়ালো।অন্ধকারের মধ্যে দাত বের করে হাসলো বলে মনে হলো।নিকষ কালোর মধ্যে যেন সাদা দাতের বিদ্যুৎ ঝলক।বললো ভাইজানের বাড়ী কল্যাণশ্রী না? বিশ্ব'দা তো আজকে দোকানে আসেনাই দেহেন না তালা ঝুলে?এতক্ষন খেয়াল করিনি যে দোকান তালাবদ্ধ,আমি এবার ধপাস করে বসে পড়লাম দোকানের বেন্চিতে।মনে হলো আামি তলিয়ে যাচ্ছি নিরাশার অন্তহীন গহ্বরে।আর কোন আশা নেই,আর কোন ভরষা নেই।সামনে পথে পথে ওৎ পেতে আছে ঘোর বিপদ।প্রথমে পড়বে মিনা গাজীর বাঁশতলা।যেখানে সাত সাতটা খুন হয়েছিল,তাদের আত্মারা এখনো নাকি এই বাঁশঝাড়ে বাস করে।রাতের বেলা এই পথে কেউ যায়না।আমার আব্বা একবার গভীর রাতে এখান দিয়ে যাচ্ছিলেন হটাৎ তিনি দেখলেন একজন বিশালদেহী মানুষ বাম পা একটি বাঁশ গাছের উপর আর ডান পা খানা নদীর ওপারে কোনখানে গিয়ে পড়েছে কে যানে,আর মস্তক এতো উপরে যে রাতের আবছা আলোয় অনুমান করা যায়না।যদি সামনে এগুতে হয় তবে তার দু'পায়ের মাঝখান দিয়ে যেতে হবে যেটা খুবই বিপদ্জনক।তিনি ঐ মুহুর্তে না গিয়ে দু'একজন লোক ডেকে নিয়ে ঐ স্থানে যখন এলেন তখন আর কিছুই পাওয়া গেল না,সব কিছু স্বাভাবিক, ভোজবাজীর মত সব উধাও হয়ে গেছে।এ কাহিনী তিনি নিজে আমাকে বলেছেন এবং ঐ স্থানের বিষয়ে সতর্ক করেছেন।তার পরে আছে "ভূতের ভিটে" মেঘমুক্ত আকাশ থাকলেও সেখানে হটাৎ হটাৎ মুষল ধারে বৃষ্টি হয়।ঐ ভিটেতে নাকি ভূত-প্রেতের নানা আনুষ্ঠানাদী হয়,আনেকে দেখেছেন। নাইটগার্ডের কথায় চমক ভাংলো ভাইজান কি একলা যাইতে ডর লাগে? আমার তো বাজারে নাইট ডিউটি নাইলে আমি দিয়া আইতাম।আমি বললাম না না ঠিক আছে আমি একাই যেতে পারবো,তুমি চিন্তা করোনা।এখন আর এখানে বসে থাকা যায় না পাছে ও আমাকে ভীরু কাপুরুষ ভেবে বসে।বয়স আমার ষোল বছর।স্কুলে রেজিসট্রেশন করার সময় জন্ম তারিখ বলতেই হেড মাষ্টার শাহজাহান সাহেব চশমার উপর দিয়ে আমার চোখে চোখ রাখলেন বললেন ১৮ বছরের কম হলে তো SSC পরীক্ষা দেয়া যাবে না বাবা।এর চেয়ে কম বয়সে SSCপাশ করা যায় না,তোর এক বছর বয়স বাড়াতে হবে।আমার দিকে আঙ্গুল উচিয়ে বললেন আমি নিজে এনট্রান্স পাশ করেছি ২৭ বছর বয়সে তখন আমি রীতিমত সংসারী আমার তখন দু'সন্তান,আর তোরা এতো অল্প বয়সে পাশ করে কিছুই করতে পারবি না তোদের তো ম্যাচিউরিটি আসে নাই। আমি চুপ করে দাড়িয়ে থেকে তার তেলতেলে মাথায় সিলিং ফ্যানের প্রতিবম্ব দেখছিলাম।উনি আমার সার্টিফিকেট বয়স ১ বছর বাড়িয়ে রেজিসট্রেশনে জন্য পাঠালেন।কিন্তু এখন বুঝছি সার্টিফিকেটে বয়স বাড়লেও কোন লাভ হয় নাই শিশু শুলভ ভূতের ভয়টা মনের মধ্যে দলা পাকিয়ে আছে।মনে সাহস সন্চয় করে হাটা শুরু করতে হবে।গা ঝাড়া দিয়ে উঠে দাড়ালাম।কেষ্টপুকুর পার হলেই ডান পাশে আজমলদের বাড়ীটাই শেষ বাড়ী বলা চলে,কারন পরের কয়েকটি বাড়ী রাস্তা থেকে বেশ ভীতরে।তার পর রাস্তার কোন পাশেই আর বাড়ীঘর নেই, যেন মরুভূমির মাঝে উটের ট্রেইল বেয়ে হাটছি।হনহন করে হেটে চলেছি,ঠান্ডা বাতাশ বইছে পশ্চিম দিক থেকে।নদীর হাওয়া। কয়েক কদম সামনেই মিনা গাজীর বাঁশতলা হঠাৎ পিছনে পায়ের শব্দে চমকে উঠলাম পিছন ফিরে তাকালাম কেউ নেই।কিন্তু আমি স্পষ্ট শুনেছি ভূল হবার নয়,হাটার গতি বাড়ালাম পায়ের সব্দটাও আমার সাথে সাথে গতি বাড়ালো।মিনা গাজীর বাঁশতলা পার হচ্ছি,পায়ের শব্দের সাথে ফিসফিস কথার আওয়াজ শুনলাম,হুট করে ঘুরে দাড়ালাম ভেবেছিলাম দুজনকে দেখবো,মাণুষ নয়তো ভূত।কিন্তু দেখলাম একজনকে তাও আবার একটি বিড়াল মানুষ নয়,ভূতও নয়।কুচকুচে কালো একটি বিড়াল,কিন্তু পায়ের সব্দ,ফিসফিস কথা? বিড়ালের তো পায়ের আওয়াজ হয়না,কথাও বলতে পারেনা।মনের ভূল?হবে হয়তো।ভূত বিষয়ে কোন কথা মনে প্রশ্রয় দেবোনা,পৃথীবিতে ভূত বলে কিছু নেই।কিছু দুষ্টু জীন আছে তারা বিভিন্ন রূপ ধরে মানুষকে ভয় দেখায় মৌলবী স্যার বলেছেন।উনি মস্তবড় আলেম,তিনি নিশ্চয় ভূল বলতে পারেন না।মনে সাহস আনার চেষ্টা করি তবুও খুব ভয় করছে,কিভাবে এতোটা পথ পাড়ী দেবো?দু'কিলোমিটার পথ মনে হচ্ছে হাজার মাইল।পথ যেন শেষ হবার নয়। একটি তীব্র আতরের গন্ধ পাচ্ছি।আমাদের পাশের বাড়ীর 'কানা বুড়ো' মারা যাবার পর যখন গোছল শেষ করে কাফনে মোড়ানো হলো তখন এমন আতরের গন্ধ পেয়েছিলাম।অবশ্য মা আমাকে ওখানে বেশী সময় দাড়াতে দেননি ছোঁ মেরে নিয়ে এলেন আমার ছোট্ট হাত ধরে।মৃত ব্যাক্তি ছিলেন সম্পর্কে আমার মায়ের আপন নানা।কিন্তু সেই আতরের গন্ধ এখানে কেন?এখানে তো কেউ মারা যায়নি আর যদি কাউকে আশেপাশে কবর দেয়া হয়ে থাকে তবে মাটি চাপা পড়ে আতরের শুবাস এতোক্ষনে শেষ হয়ে যাবার কথা। বিড়ালটি আমার পিছু ছাড়ছে না তাছাড়াও অদৃশ্য কেউ আমার সাথে যেন হাটছে,আমি তার স্পষ্ট পায়ের আওয়াজ শুনতে পাচ্ছি।ঘাড়ের উপর যেন গরম নিশ্বাসঃ ফেলছে কেউ,কিন্তু পিছনে তাকাতে ভয় লাগছে।এই বুঝি ঘাড় মটকে দেয়। এই বাঁশ তলার আশেপাশে কোথাও আকরাম মেম্বার বাড়ী করেছে বলে শুনেছি।ভীষন সাহসী মানুষ বলে মনে হলো তাকে।কোথায় তা জানিনা,রাস্তা থেকে বাড়ীটি দেখা যায়না।বিড়ালটিকে একটু বাজিয়ে দেখলে হতো আসল বিড়াল নাকি ভূতের ছদ্দরূপ।পিছন ফিরে হাতে তালি মেরে একটা দাবড় দিলাম বিড়ালটি মিঁষ্ণ আওয়াজ তুলে রাস্তার পাশে খাদে নেমে আমার দিকে করুন দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো।কাকুতী ঝরে পড়ছে তার চোখে মুখে যেন তাকে একা ফেলে না যাই এই মিনতী যেন করছে সে। আসলে কি তাই?নাকি এটা ভূতের একটি ফাঁদ?এভাবে অসহায় পশু সঙ্গী সেজে লোকালয়ের বাইরে নিতে পারলেই তার উদ্দশ্য সফল ঘাড় মটকাতে পারে।আমি মোটামুটি লোকালয়ের বাইরে এসে পড়েছি।মিনা গাজীর বাঁশতলা পার হয়েছি কিন্তু ভূত আমার আশেপাশে রয়েছে বলে অনুভূত হচ্ছে।এখান থেকে ডাক দিলে কেউ কি শুনতে পাবে?মনে হয় না।তার পরও একটা চেষ্টা করে দেখি।কাউকে ডাক দেয়া ঠিক হবেনা যদি কেউ ছুটে আসে তাকে কি বলবো একটা বিড়ালকে ভয় পাচ্ছি?তার'চে গান গেয়ে দেখি গলায় কেমন জোর আছে,প্রয়োজন হলে পরে হাকডাক দেয়া যাবে।গান ধরলাম "ওরে নীল দরিয়া" গানটির কোন সব্দই আমার কন্ঠ দিয়ে বের হলোনা,অদ্ভূত এক অস্ফুটঃ গোঙ্গানীর মত মৃদু কাঁপা কাঁপা আওয়াজ বের হলো গলা দিয়ে।ভীষন ভয় পেয়েছি মনে হলো। এমন একটা জায়গায় এসে পড়েছি যেখান থেকে ফেরার উপায় নেই পিছনে মিনা গাজীর বাঁশতলা,সামনে ভূতের ভিটে,পিছন থেকে ঘাড় মটকাতে পারে সামনে থেকেও আক্রমন আসতে পারে। ভূতের ভিটে পার হবার সময় পথের বাম পাশ দিয়ে হাটতে হবে যাতে কেউ হঠাৎ ধাক্কা দিয়ে ডান পাশে থাকা গেটের মধ্যে আমাকে ঢুকিয়ে ফেলতে না পারে।কয়েক বছর আগে এই ভূতের ভিটের মধ্যে একটি অজ্ঞাতনামা লাশ পাওয়া গিয়েছিল।সবাই বলাবলি করছিল ভূতের কাজ,কিন্তু থানার ওসি সাহেব মানলেন না তিনি দীর্ঘ দিন তদন্ত করলেন কিন্তু ফলাফল কিছুই হলো না।হবে কি করে?ভূতের বিরূদ্ধে থানা-পুলিশ,আইন-আদালত চলে নাকি?। ভূতের ভিটে পার হবার সময় ভীষন তীব্র একটি আওয়াজ আমার কানে বাজতে থাকলো ঝিঝি পোকার সব্দ যেন এক'শ গুন বেশী হয়ে আমার কর্নকুহরে আঘাত হানছে।এমন অতি তীব্র আওয়াজে মানুষ জ্ঞান হারাতে পারে।হটাৎ এক ঝাক বাদুড় উড়ে গেল জেট বিমানের মত সব্দ তুলে আমার মাথার সামান্য উপর দিয়ে ,পিলে চমকানো আবস্থা।মনে হচ্ছে নির্বিঘ্নে পার হতে পেরেছি,কেউ ঘাড় মটকায়নি।শুধু শুধু ভয় পাচ্ছিলাম,মনটা একটু হালকা লাগছে।সামনের পথটা ভীষন ফাঁকা,রাস্তার ডানে বামে কোন লোকালয় নেই দু'ধারে ফাঁকা বিল। তৈত্রের খরতাপে মাঠ ফেটে চৌচির।সারা মাঠ স্বেতশুভ্র রং ধারন করছে,মনে হচ্ছে সমস্ত মাঠ জুড়ে কেউ চুনকাম করে রেখেছে।চৈতি চাঁদের আলোয় ভীষন মায়াবী লাগছে,দুরে নারিকেল গাছের সারির এক মনরম দৃশ্য।এক মুহূর্ত যেন ভয় থেকে বহুদূরে সরে গেলাম,এখন এক অনাবিল প্রশান্তি মনকে ছুয়ে আছে।হাটার গতি একই আছে।সামনে একটা জায়গায় একটু ভয় আছে তবে জায়গাটা আর আগের মত নেই এখন ঝোপঝাড় কেটে অনেকটা ফাঁকা করা হয়েছে।সে জায়গাটাকে সবাই বলে "পোড়ো তেঁতুল গাছ"।আমার জ্ঞান হবার পর আমি সেখানে কোন তেঁতুল গাছ দেখিনি তবে একটি বিশাল গুড়ি সেখানে পড়ে থাকতে দেখেছি।গুড়িটি দেখেই অনুমান করা যায় কত বিশালত্বের অধিকারী ছিল এই গাছটি,কোন এক ঝড়ে এটি পড়ে যায় আর পড়ে গেলে তার বিশালত্ব কি আর বজায় থাকে?তার সেই গৌরব অচিরেই জ্বালানী কাঠ হয়ে চলে গেছে মানুষের চুলোয়।পড়ে আছে গুড়িটি তার বিভিন্ন অঙ্গে বসে কৃষকরা হুকোর তামুক সাজে।ঐতো ২০০ গজ দুরেই গুড়িটি পড়ে থাকতে দেখতে পাচ্ছি স্পষ্ট,শুধু চাঁদের আলোয় একটু অন্যরকম লাগছে।সব সময় দিনের আলোতে দেখি বলেই হয়তোবা।মনে হচ্ছে যেন একটি ঘোড়া দাড়িয়ে আছে। video credit-Mixkit.com তা তো ভালোই হলো এবার ঘোড়ায় চড়ে টকবগ টকবগ করতে করতে রূপকথার রাজকুমারের মত প্রাসাদে চলে যাবো।দাদু মাকে ডেকে ঠাট্টা করে বলবেন বৌমা তোমার ছেলে বড় হয়েছে,বিশ্ব জয় করে ফিরেছে এবার একটা রাজকন্যা দেখে বিয়ে দিয়ে দাও।নিজের সঙ্গে নিজেই হালকা রসিকতা করি।এইটুকু পথ পেরুলেই বাড়ীর আঙ্গিনা আর ভয় নেই মনে ভীষন সাহস ফিরে এসেছে।রাতের আলোতে কতকিছুই না কতো বিকৃত দেখা যায় তেঁতুল গাছের গুড়ি দেখাচ্ছে কিনা ঘোড়ার মত।দ্রুতলয়ে সামনে এগুচ্ছি তেঁতুল গাছের গুড়ি থেকে ২০ ফুট তফাতে দাড়িয়ে আমি।কিন্তু এখানে তো সত্যিই একটা ঘোড়া দাড়িয়ে আমার দিকে পিছন ফিরে।গাছের গুড়িটা গেল কোথায়?এটাও কি মানুষের চুলোয় ঢুকে গেল নাকি?এতোবড়ো গুড়ি দুই দিনে নিতে গেলে কত লোক কত ঘন্টা নিরলস কাজ করার প্রয়োজন?কোনো ঐকিক নিয়মেই আমার অংক মিললো না। ডালমে কুছ কালা হ্যায়।খুব কাছে আসতেই আমার আত্মারাম খাচাছাড়া হবার জোগাড়,হৃদপিন্ড হঠাৎ থমকে গেল যেন,পা থেমে গেল আপনা আপনি।ঘোড়াটা জীবন্ত,নড়াচড়া করছে,হাটছে কিন্তু তার মাথা নেই।শুনেছি মুন্ডু কাটা ঘোড়া বলে এক প্রকার ভূত আছে তাদের পিঠে একজন সহিস থাকে আর তার হাতে থাকে তেল মাখানো চামড়ার চাবুক।সেই চাবুক দিয়ে সামনে যাকে পায় তাকে আঘাত করে কিন্তু এ আমাকে কিভাবে আঘাত করতে পারে,এর তো সহিসও নেই চাবুকও নেই।কালো বিড়ালটি হঠাৎ গায়েব হয়ে গেছে,তাকে আর দেখা যাচ্ছে না।এখন কি হবে?কপালে মৃদু ঘাম দেখা দিয়েছে,হাত পা অবস লাগছে,এখানেই পড়ে যাবো বলে মনে হচ্ছে।এমন সময় সাদা একটি মেঘ এসে চাঁদটাকে ঢেকে দিল।আধারে পূর্ণ হলো চারিদিক।একফুট দুরের জিনিষও দেখা যাচ্ছে না।হটাৎ আমার মনে পড়লো কোথায় যেনো শুনেছিলাম আগুন এবং লোহা এই দুটো বস্তু কাছে থাকলে ভূত-প্রেত নাকি আক্রমন করতে পারে না।কিন্তু আগুনতো আমার কাছে নেই আর লোহা বলতে একটা জালের গাটি কোমরে তাগির সাথে মা বেধে দিয়েছিলেন ছোটবেলায় তা কি এতোদিন আছে নাকি?হাত দিয়ে অনুভব করার চেষ্টা করি নাহ্ খুজে পাচ্ছি না,ব্যাস্ত সময়ে জরুরী কিছুই খুজে পাওয়া যায় না।কিছুই দেখা যাচ্ছেনা।হিম-শীতল স্রোত বয়ে যাচ্ছে আমার মাথার তালু থেকে পায়ের পাতা অব্দি।ঘোড়াটার খুরের সব্দ পাচ্ছি আমার দিকেই ধীর পায়ে এগুচ্ছে।এই বুঝি আমার ঘাড়ে এসে পড়লো।আমি স্থানুর মত দাড়িয়ে আছি কোন দিকে হেলতেও ভয় লাগছে।হঠাৎ চাঁদের উপর থেকে মেঘ সরে গেল স্পষ্ট দেখলাম আমার থেকে মাত্র ৬/৭ ফুট দুরে ঘোড়াটি দাড়িয়ে আছে তার পাশে একজন শ্বেত-শুভ্র পোষাকের বলিষ্ঠ ঠেহারার বৃদ্ধ ছোট একটি গাছে হেলান দিয়ে বসে তার হাতের তরবারিতে ধার দিচ্ছে।যেন ঘোড়সওয়ার কোন যাযাবর পথের ক্লান্তি দূর করার জন্য দু'দন্ড বিশ্রাম নিচ্ছে।চেহারার মধ্যে নেই কোন ক্ষোভ,নেই কোন হিংস্রতা,নেই কোন প্রতিষোধ পরায়নতা,সৌম্য শান্ত ক্লান্ত অবয়ব।যেনো কোন প্রাগৈতিহাসিক যুগের মহান কোন সৈনিক বসে আছে আমার থেকে মাত্র ১০ ফিট দুরে।আমি ভাংগা গলায় শুধালাম কে আপনি?কোথা থেকে এসেছেন?।নিরুত্তর,সে আপন মনে নিজের কাজ করে যাচ্ছে,যেন শুনতেই পায়নি। চিকন খনখনে গলার একটি অট্ট হাসি শুনতে পেলাম আমার ডান পাশের ঝোপঝাড়ের ওপাশ থেকে।একবার,দু'বার,বারবার ভৌতিক হাসিটা যেন থামছেই না।ঘোড়াওয়ালা আগুন্তুককে এখন আর তেমন ভয় লাগছে না যেমন ভয় লাগছে ঐ অদৃশ্য হাসি দায়ীনিকে।আগুন্তুকের চেহারা ভয়ংকর নয় তবে কার্যকলাপ ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে আর সেটা যে কত ভয়ংকর হতে পারে তা আমি দেখতে পারবো বটে কিন্তু হয়তো বর্ণনা করতে পারবো না,কারন বেচেঁ থাকলেই না বর্ণনা করবো সে আশাই তো দেখছি না।আমাকে চতুর্দিক থেকে তারা ঘিরে ফেলেছে।অসহায় আত্ম সমার্পন নাকি আত্বরক্ষার যুদ্ধ?কিছুই মাথায় আসছে না।হাসির সব্দটা আরো কাছে চলে এসেছে,আমার চারিদিকে অদৃশ্য আত্বারা ঘোরাঘুরি করছে,মৃদুস্বরে সোরগোল করছে কিন্তু কি বলাবলি করছে কিছু বোঝা যাচ্ছে না।আগুন্তুক নির্বিকার ধীর লয়ে তার তরবারি শান দিচ্ছে,জগতের কোন কিছুতেই তার খেয়াল নেই।আমার পায়ের গোড়ালী বেয়ে তিরতির করে ঘামের স্রোত নেমে যাচ্ছে।আমি নিস্তেজ হয়ে পড়ছি আত্বরক্ষার যুদ্ধ কিভাবে শুরু করবো ভাবতে পারছি না।দৌড় দিব?কিন্তু আগুন্তুকের পাশ দিয়ে যেতে হবে যদি হাত ধরে ফেলে?তারপর শুনেছি ওদের হাত ইচ্ছেমত লম্বা করতে পারে ১০ ফিট অথবা ১০০ ফিট।অন্য কোন উপায় ভাবতে হবে।সোরগোল ক্রমেই বাড়ছে যেন শত শত প্রেতাত্মা সবাই সবার সাথে একসাথে কথা বলছে অনেকটা মৌমাছির গুন্জনের মত।আমার খুব কাছে ওরা ঘোরাঘুরি করছে এক'দু ফুটের মধ্যে।ওদের চলাফেরার বাতাস লাগছে আমার গায়ে।আমি পাথরের মূর্তির মত দাড়িয়ে আছি কিংকর্তব্যবমূঢ়ঃ।হাসি কান্না সুখ দুখঃ পৃথীবির কোন কিছুই যেন আমাকে আর স্পর্শ করছে না আমি অন্য কারো বশ হয়ে গেছি,যেন অন্য জগতের মানুষ। বাচাঁর আকাংখ্যা আমার মনের গভীরে শুধু ক্ষীণ প্রদীপ শিখার মত জ্বলে আছে কিন্তু আমার দেহ তাকে কোন সহায়তা দিচ্ছে না।হটাৎ একটা অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটলো একটি কুকুরের ডাক শোনা গেলো একটু দুরে,তারপর আরেকটা,তারপর আরও একটা,কুকুর গুলো ঘেউ ঘেউ করে আমার দিকেই ছুটে আসছে বলে মনে হলো।অনেকগুলো কুকুর যেন একসাথে আমার দিকে ছুটে আসছে।ছুটতে ছুটতে ওরা কাছে এসে পড়েছে।আবার অন্ধকার হয়ে গেল মনে হয় কোন মেঘ আবার চাঁদকে ঢেকে দিয়েছে,ঘাড় ঘুরিয়ে দেখতে চাইলাম শরীর সায় দিলোনা। কুকুরগুলো বেশ কাছে এসে পড়েছে মনে হলো।অন্ধকারে কিছুই দেখা যাচ্ছে না,এবার মনে হচ্ছে আমার সম্মোহনী অবস্থা কিছুটা কেটে গেছে। কুকুরগুলো আমার খুব কাছে ঘোরাঘুরি করছে।ধীরে ধীরে চাঁদের উপর থেকে মেঘ সরে যাচ্ছে,আলোর বন্যায় ভেসে যাচ্ছে রূপালী ধরণী।আগুন্তুক নেই তার মুন্ডু কাটা ঘোড়াও নেই।একটি কুকুর আমার ডান হাতে টোকা দিচ্ছে,কোল ঘেষে দাড়াচ্ছে আরে এতো 'টম' আমার মামা বাড়ীর পোশা কুকুর।আমার মা যখন মামা বাড়ী থেকে ফেরে তখন পাহাড় পর্বত ডিঙ্গিয়ে হলেও ও মা'র সাথে আসবেই,দু'চার দিন থেকে নিজের ইচ্ছায় আবার চলে যাবে।প্রথম দিকে আমাদের গ্রামের অন্য কুকুরদের সাথে ঝগড়া হতো,পরে তারাও বুঝে গেছে যে ও থাকতে বা কারো জায়গা দখল করত আসে না স্রেফ বেড়াতে আসে।এখন আমাদের গ্রামের অন্য অন্য কুকুরদের সঙ্গে ওর ভাব হয়ে গেছে।আমরা এবার বড়ীর দিকে হাটা শুরু করলাম।টম আমার ডান পাশে হাটছে।ঘাম দিয়ে যেনো আমার জ্বর নেমে গেছে।নিশ্চিৎ মৃত্যুর হাত থেকে ফিরে এসেছি।দুরে একটি কিছু দেখে টম ঘেউ ঘেউ করতে করতে দিলো ছুট সাথে অন্যরাও আমি চিৎকার করে এতো ডাকলাম কে শোনে কার কথা।আমি আসলে একা হতে চাইছিলাম না চাইছিলাম বাড়ী পর্যন্ত ওরা আমার সাথে থাকুক।কিছুক্ষন পর টম ফিরে এলো আমার গা ঘেষে হাটছে অন্য দু'একটি কুকুর একটু দুরে হাটছে,বাড়ীর গেট দেখা যাচ্ছে।গেট পার হয়ে জোৎস্নার আলোয় সাদা ধবধবে উঠোন।দরজায় টোকা দেব ঠিক তখনি মা দরজা খুলে দিল,তুমি কি জেগে ছিলে মা?একটু পরে আযান হবে আমিতো এসময়েই উঠি মা বললো। আমার ঘরটা যেন গুমোট গরম পূব দিকের জানালাখুলে দিই।ঠান্ডা মিষ্টি হাওয়া বইছে।একটু পরেই আলো ফুটবে,রাতের ভয়ংকর আঁধার পেরিয়ে শুরু হবে সোনালী সকাল।আলোর বন্যায় ভরে উঠবে আমাদের চির চেনা এ সুন্দর পৃথীবি।দুরের মসজিদ থেকে ফজরের আযানের ধ্বনি ভেসে এলো,হাইওয়ালাস্ সালা-আ-আ,হাইওয়ালাল ফালা-আ-আ। সমাপ্ত। https://wwwcreativecanvascrafts.blogspot.com/ https://journalview360.blogspot.com/ https://sites.google.com/view/epicexplorerhub